২০২8-২৫ সালের সিনেমার অনুদানের জন্য চিত্রনাট্য আহ্বান করেছে সরকার।
বরাবরের মতো ২০২৪-২৫ অর্থ বছরেও ১২টি পূর্ণদৈর্ঘ্য ও ২০টি স্বল্পদৈর্ঘ্য মিলিয়ে সর্বমোট ৩২টি চলচ্চিত্রকে অনুদান দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশে সরকারী চলচ্চিত্র অনুদান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীস্থ একটি অনুদান প্রকল্প। চলচ্চিত্র শিল্পে মেধা ও সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ১৯৭৬ সাল থেকে প্রতি অর্থবছরে সিনেমা নির্মাণের জন্য সরকারি অনুদান দেওয়া হয়ে থাকে এবং দেশের প্রথম অনুদান প্রাপ্ত চলচ্চিত্র সূর্য দীঘল বাড়ী যার নির্মাতা শেখ নিয়ামত আলী। মাঝে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে বন্ধ থাকলেও ২০০৭-০৮ অর্থবছর থেকে এখন পর্যন্ত নিয়মিত ভাবে অনুদান দেয়া হয়ে আসছে।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অনুদানের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের চলচ্চিত্র প্রকল্প অগ্রাধিকার পায়, যেমন ডকুমেন্টারি, কাহিনী নির্ভর ও মুক্তিযুদ্ধ ও সাহিত্য নির্ভর চলচ্চিত্র অগ্রাধিকার পেয়ে থাকে। স্বল্প দৈর্ঘ্য ( অনুর্ধ ৩০ মিনিট) ও পূর্ণদৈর্ঘ্য এই দুই প্রকারের চলচ্চিত্র কে অনুদান প্রদান করা হয়।
চলতি বছর সরকারি অনুদানের জন্য পূর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব আহ্বান করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। ১৪টি শর্তসাপেক্ষে প্রযোজক, পরিচালক ও চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টরা অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব শারমিন আখতার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আরও পড়ুনঃ- মহাকাশ অভিযানে যাচ্ছেন বিশ্বখ্যাত মার্কিন পপ তারকা কেটি পেরি
তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পূর্ণদৈর্ঘ্য সর্বোচ্চ ১২টি ও স্বল্পদৈর্ঘ্য সর্বোচ্চ ২০টি অর্থাৎ সব মিলিয়ে মোট ৩২টি চলচ্চিত্রকে অনুদান দেওয়া হবে। পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমার ক্ষেত্রে ছবির দৈর্ঘ্য হতে হবে কমপক্ষে ৭০ মিনিট। স্বল্পদৈর্ঘ্যের ক্ষেত্রে কমপক্ষে দৈর্ঘ্য হতে হবে ৩০ মিনিট।
বিজ্ঞপ্তিতে প্রদেয় শর্তে জানানো হয়, শুধুমাত্র দেশীয় নির্মাতা ও প্রযোজকেরা অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারবেন । অর্থাৎ প্রযোজক, পরিচালক, চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব ও চলচ্চিত্র নির্মাণ ক্ষেত্রে পেশাদাররাই গল্প জমা দিতে পারবেন এবং একই সঙ্গে আলাদা প্রস্তাবে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান
পূর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমার জন্য আবেদন করতে পারবে। তবে পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমার ক্ষেত্রে অনুদানপ্রাপ্ত প্রথম সিনেমা মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমার ক্ষেত্রে সার্টিফিকেশন সনদ গ্রহণ ব্যতীত কোনো প্রযোজক পুনরায় আবেদন করার যোগ্য হবেন না।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগ্রহীদের চলচ্চিত্রের গল্প, চিত্রনাট্য ও অভিনয়শিল্পীদের নামসহ পূর্ণাঙ্গ প্যাকেজ আগামী ৭ এপ্রিল বিকেল চারটার মধ্যে তথ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে। নির্মাণের সার্বিক পরিকল্পনা, শিল্পী ও কলাকুশলীদের তালিকাসহ প্রতিটি পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাবের ১২টি কপি জমা দিতে হবে।অনুদান প্রদানে সরকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত এবং অনুদান প্রদানের পরও সরকার যেকোনো নতুন শর্তারোপ করতে পারবে।
এরপর চলচ্চিত্র অনুদান কমিটি এসব চলচ্চিত্রের যাচাই বাছাই করবেন।সরকারি অনুদান দেওয়ার জন্য স্বচ্ছতা ও সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে চলচ্চিত্র বাছাইয়ের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দেশে রয়েছে পুনর্গঠন পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদান কমিটি। দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড, জুরি বোর্ড, অনুদান কমিটি প্রভৃতি পুনর্গঠন করা হয়েছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবক (চলচ্চিত্র) ছাড়াও এই কমিটির বাকি ৮ সদস্য যারা এই জমাপ্রাপ্ত অনুদানের সিনেমার কাহিনী ও চিত্রনাট্য যাচাই বাছাই করবেন তারা হলেন- তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নায়ন কর্পোরেশনের (বিএফডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিস বিভাগের শিক্ষক ও অভিনেতা-নির্দেশক ড. আবুল বাশার মো. জিয়াউল হক (তিতাস জিয়া), চলচ্চিত্র নির্মাতা ও প্রযোজক খান শারফুদ্দীন মোহাম্মদ আকরাম (আকরাম খান), চলচ্চিত্র নির্মাতা ও চিত্রনাট্যকার নার্গিস আখতার, রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি আহমেদ মুজতবা জামাল, নির্মাতা ও সম্পাদক সামির আহমেদ, অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম।
চলচ্চিত্রশিল্পের উৎকর্ষ বৃদ্ধ করতে এবং বাংলাদেশের আবহমান সংস্কৃতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে প্রতিবছর সরকার অনুদান দিয়ে আসছে। গত বছর ২০টি সিনেমা ও ৬টি স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমাকে অনুদান দেওয়া হয়।
স্টাফ রিপোর্টার
সর্বাধিক পঠিত
Loading...