এনভিডিয়া কর্পোরেশন এবছর অসাধারণ সাফল্যের পথে হেঁটে মাইক্রোসফট ও অ্যাপলকে পেছনে ফেলে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রসার বাড়তে থাকায়, এই প্রযুক্তিতে বিনিয়োগের কারণে এনভিডিয়ার বাজারমূল্য ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই প্রবৃদ্ধির ফলে মঙ্গলবার নিভিডিয়ার শেয়ার ৩.৫% বেড়ে $১৩৫.৫৮ ডলারে পৌঁছেছে, যার ফলে কোম্পানির মোট বাজারমূল্য প্রায় $৩.৩ ট্রিলিয়ন ছুঁয়েছে, যা মাইক্রোসফট এবং অ্যাপলকে অতিক্রম করেছে।
এই মাসের শুরুর দিকেই এনভিডিয়া প্রথমবারের মতো বাজারমূল্যে অ্যাপলকে ছাড়িয়ে যায়। সাম্প্রতিক কিছুদিনে এই তিনটি বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান একে অপরের সাথে স্থান ধরে রাখার প্রতিযোগিতায় ছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত এনভিডিয়া শীর্ষ স্থানে উঠে এসেছে। এনভিডিয়ার এই সাফল্য প্রমাণ করে যে বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিনিয়োগকারীদের প্রধান আকর্ষণ। এই প্রযুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় জটিল গণনামূলক কাজ চালানোর সক্ষম চিপ তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে এনভিডিয়া এই খাতে প্রথম ও প্রধান সুবিধাভোগী হিসেবে অবস্থান করছে।
এনভিডিয়ার H100 অ্যাক্সিলারেটরের জন্য চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে, যা গত বছর তাদের বিক্রয়কে ১২৫ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি করেছে। অন্যদিকে, মাইক্রোসফটও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে, বিশেষত OpenAI-এর সাথে তাদের অংশীদারিত্বের কারণে, যা ChatGPT তৈরি করেছে। তাছাড়া, অ্যাপলও এ সপ্তাহে তাদের AI ব্যবহারের পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে, যা বিনিয়োগকারীদের সন্তুষ্ট করেছে।
উইডবুশ সিকিউরিটিজের বিশ্লেষক ড্যানিয়েল আইভস জানান, “আগামী বছরে $৪ ট্রিলিয়ন বাজারমূল্যের দৌড়ে এনভিডিয়া, অ্যাপল এবং মাইক্রোসফটের মধ্যে প্রতিযোগিতার কেন্দ্রে থাকবে।” এনভিডিয়ার দ্রুত উত্থানের ফলে কোম্পানিটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী জেনসেন হুয়াং বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তিদের একজন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। বছরের শুরু থেকে তার সম্পদের পরিমাণ প্রায় $৭৫ বিলিয়ন বেড়ে $১১৯ বিলিয়ন হয়েছে, যা ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্সে তাকে ১২তম স্থানে এনেছে। তাঁর সম্পদ বৃদ্ধির এই হার অন্য কোনো বিলিয়নেয়ারের ক্ষেত্রে দেখা যায়নি।
আরও পড়ুনঃ- ইউটিউবে আসছে প্রিমিয়াম লাইট, সীমিত বিজ্ঞাপনে সাশ্রয়ী সেবা!
বিনিয়োগকারীরা এনভিডিয়াকে শুধুমাত্র চিপ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নয়, বরং এর থেকেও বেশি কিছু বলে মনে করেন। “তারা শুধু চিপ বিক্রি করছে না, তারা সম্পূর্ণ সিস্টেম বিক্রি করছে,” ব্যারন ক্যাপিটাল ইনকরপোরেটেডের সহ-সভাপতি এবং পোর্টফোলিও ম্যানেজার মাইকেল লিপার্ট বলেন। তিনি উল্লেখ করেন, কোম্পানিটির নিজস্ব সফটওয়্যার ও উন্নয়ন ব্যবস্থা এনভিডিয়াকে অন্যান্যদের থেকে আলাদা করে তুলেছে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব বৃদ্ধি প্রমাণ করেছে যে এনভিডিয়া এই প্রযুক্তির বিকাশের সর্বাধিক সুযোগ নিতে পেরেছে। ২০২৪ সালে এনভিডিয়ার শেয়ারের মূল্য ইতোমধ্যেই ১৭০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে, যা তাদের বাজারমূল্যে $২ ট্রিলিয়নেরও বেশি যোগ করেছে। আইভসের মতে, “এনভিডিয়ার GPU চিপগুলি এখন প্রযুক্তি খাতের জন্য নতুন সোনা বা তেলের মতো হয়ে উঠেছে, কারণ ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের পথে আরও বেশি প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবহারকারী দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে।”
ডেস্ক রিপোর্টার
সর্বাধিক পঠিত
Loading...