রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র, বর্তমান বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দুটি দেশ, যাদের মধ্যে সম্পর্ক ইতোমধ্যেই তিক্ততার চরমে পৌঁছেছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পরে এই সম্পর্ক আরও খারাপ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার একটি আদালত সম্প্রতি মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগলের বিরুদ্ধে বড় অংকের জরিমানা আরোপ করেছে।
মস্কোর টাগানস্কি জেলা আদালত গুগলকে ২০ ডেসিলিয়ন ডলার জরিমানা করেছে, যা এত বিশাল যে পুরো বিশ্ব অর্থনীতির চেয়েও বেশি। এ অর্থের পরিমাণ এমন যে পৃথিবীতে এতো টাকা আসলে নেই বললেই চলে। জরিমানা করার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ইউটিউবে রাশিয়ার ইউক্রেনে চালানো বিশেষ সামরিক অভিযানের বিষয়ে ভুল তথ্য অপসারণে গুগল ব্যর্থ হয়েছে।
রাশিয়ার টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা রসকোমনাদজর জানায়, ইউটিউবে কিছু কনটেন্ট রয়েছে যা রাশিয়ার সামরিক কার্যক্রমকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করছে। তারা দাবি করে যে, এসব তথ্য রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর ভাবমূর্তির ক্ষতি করছে এবং গুগল তা সরিয়ে নিতে পদক্ষেপ নেয়নি। এ কারণেই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে এ ধরনের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তবে এই বিশাল অংকের জরিমানা আদায় হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রাশিয়া এই পদক্ষেপকে প্রতীকী হিসেবে বর্ণনা করছে, যার মাধ্যমে গুগলকে রাশিয়ার প্রতি তাদের নীতিগত অবস্থান পুনর্বিবেচনা করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। সরকারের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ইউটিউবে রুশ মিডিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি রাশিয়া কতটা গুরুত্ব সহকারে দেখছে, তা গুগল ও অন্যান্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে স্পষ্ট করতে এই জরিমানার ঘোষণা করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ- গাইডলাইন না মানায় ইমোতে বাংলাদেশের ৬ লাখ অ্যাকাউন্ট বাতিল!
আদালত আরও জানায়, এর আগেও গুগলকে একই ধরনের তথ্য সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে গুগল সেই নির্দেশ অমান্য করায় এবার বড় অংকের জরিমানা আরোপ করা হয়েছে। রাশিয়ায় কার্যক্রম পরিচালনা করতে গুগল ও অন্যান্য প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো একাধিক চাপের মুখে পড়েছে এবং ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকেই তারা রাশিয়ায় তাদের কার্যক্রম কমিয়ে আনছে। ২০২২ সালে গুগল তার রাশিয়ান শাখা কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে, তবে এর পরে দেশটির আইন ও নিয়মকানুন মেনে চলার চাপ এখনও অব্যাহত রয়েছে।
এই ঘটনায় রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার টানাপোড়েন আরও বেড়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের প্রতীকী জরিমানার মাধ্যমে রাশিয়া দেখাতে চাচ্ছে যে তারা তাদের ইচ্ছা এবং নীতির বাইরে অন্য কোন দেশের চাপ মেনে নেবে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতি রাশিয়া এবং পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে প্রযুক্তিগত দ্বন্দ্বের একটি বড় উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ডেস্ক রিপোর্টার
সর্বাধিক পঠিত
Loading...