অনেক মানুষই দৈনন্দিন যোগাযোগের জন্য মেসেজিং অ্যাপ 'ইমো' ব্যবহার করে থাকেন। তবে, ইমো অ্যাকাউন্ট নিরাপদ না থাকলে ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং এমনকি প্রতারণা ও হ্যাকিংয়ের মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। তাই আপনার ইমো অ্যাকাউন্টের সুরক্ষা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইমো কর্তৃপক্ষ তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। আসুন জেনে নিই কিভাবে সহজেই ইমো অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখতে এবং প্রতারণা এড়াতে পারেন।
১. দুই স্তরের যাচাইকরণ বা ‘টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন’ চালু করুন
ইমো অ্যাপের ‘টু স্টেপ ভেরিফিকেশন’ একটি নিরাপত্তার বাড়তি স্তর যোগ করে। এ ফিচারটি চালু করলে, নির্ভরযোগ্য ডিভাইস ছাড়া অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করা সম্ভব নয় এবং কোনো অননুমোদিত ডিভাইস থেকে প্রবেশের চেষ্টা করলে একটি বিশেষ কোড লাগবে। আপনার ইমো অ্যাকাউন্টের সেটিংসের ‘অ্যাকাউন্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি’ অপশনে গিয়ে সহজেই এটি চালু করতে পারেন। এক্ষেত্রে নিশ্চিত করতে হবে যে আপনার ইমো অ্যাপটি সর্বশেষ সংস্করণে আপডেট করা আছে। পুরনো সংস্করণে এই ফিচার চালু করলে অ্যাকাউন্ট ব্যবহারে সমস্যা হতে পারে।
২. ‘ফিশিং’ থেকে সতর্ক থাকুন
ফিশিং হলো এমন এক ধরনের সাইবার প্রতারণা, যেখানে ব্যক্তিগত তথ্য হাতানোর উদ্দেশ্যে প্রতারণামূলক ইমেইল, মেসেজ বা ওয়েবসাইট পাঠানো হয়। ফিশিং প্রতারণা এড়াতে, যেকোনো সন্দেহজনক ইমেইল বা মেসেজে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকুন এবং নিশ্চিত না হয়ে ইনবক্সে পাওয়া লিংকে প্রবেশ করবেন না। লিংকে ক্লিক করার আগে তার বৈধতা যাচাই করুন, এবং সন্দেহজনক কিছু দেখলে তা এড়িয়ে চলুন।
৩. ইমো অ্যাপ আপডেট রাখুন
ইমো অ্যাপের সর্বশেষ সংস্করণ ব্যবহার করার চেষ্টা করুন, কারণ প্রতিটি আপডেটের সঙ্গে নিরাপত্তা প্যাচ আসে যা অ্যাপের নিরাপত্তা বাড়ায়। পুরনো সংস্করণে নিরাপত্তার দুর্বলতা থাকতে পারে, যা হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তাই নিয়মিত আপডেট চেক করে নিন এবং সেটি ইন্সটল করুন।
৪. অ্যাপে সংযুক্ত ডিভাইসগুলি পর্যালোচনা করুন
আপনার ইমো অ্যাকাউন্টে অ্যাক্সেস আছে এমন প্রতিটি ডিভাইস যাচাই করা জরুরি। অজানা ডিভাইস দেখতে পেলে সেটি সরিয়ে ফেলুন। এই জন্য প্রোফাইল পেজে গিয়ে ‘সেটিংস’ সেকশনের ‘অ্যাকাউন্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি’ অপশন থেকে ‘ম্যানেজ ডিভাইসেস’-এ ক্লিক করে অজানা ডিভাইসগুলো মুছে ফেলুন। এভাবে আপনি নিশ্চিত থাকবেন যে শুধুমাত্র পরিচিত ডিভাইসগুলো থেকেই অ্যাকাউন্টে অ্যাক্সেস করা সম্ভব।
৫. পাবলিক ওয়াই-ফাই এড়িয়ে চলুন
ইমো ব্যবহার করার সময় পাবলিক ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক থেকে দূরে থাকুন, বিশেষ করে সংবেদনশীল তথ্য শেয়ার করার ক্ষেত্রে। পাবলিক নেটওয়ার্কে ডেটা ইন্টারসেপশন ও প্রতারণার সম্ভাবনা বেশি থাকে, তাই নিরাপদ ও ব্যক্তিগত নেটওয়ার্ক ব্যবহার করুন। এটি আপনার তথ্য নিরাপদ রাখার সহজ কিন্তু কার্যকরী একটি উপায়।
আরও পড়ুনঃ- গুগলকে রাশিয়ার ২০ ডেসিলিয়ন ডলার জরিমানা! কিন্তু কেন?
৬. অ্যাকাউন্টের কার্যকলাপ নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করুন
আপনার ইমো অ্যাকাউন্টে কোন অস্বাভাবিক কার্যকলাপ হচ্ছে কি না তা নিয়মিত চেক করুন। কেউ যদি অননুমোদিতভাবে আপনার অ্যাকাউন্টে প্রবেশের চেষ্টা করে বা সন্দেহজনক কিছু ঘটে, তবে দ্রুত পদক্ষেপ নিন। প্রায়শই অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করা অপ্রত্যাশিত প্রবেশ প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।
৭. অনলাইন নিরাপত্তার ব্যাপারে জ্ঞান বৃদ্ধি করুন
সর্বশেষ অনলাইন নিরাপত্তা সম্পর্কিত প্র্যাকটিসগুলো জানুন এবং প্রয়োগ করার চেষ্টা করুন। ইন্টারনেটে নিজের ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করার ব্যাপারে সচেতন হোন এবং নিরাপদ ব্রাউজিং প্র্যাকটিস অনুসরণ করুন। অনলাইন প্রতারণা থেকে নিরাপদ থাকতে আপডেটেড ওয়েবসাইট, ব্লগ বা টেকনোলজি নিউজ থেকে জ্ঞান আহরণ করুন।
উপরোক্ত সুরক্ষা নির্দেশনা অনুসরণ করলে ইমো অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখা অনেক সহজ হয়ে যায়। এতে শুধু ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত থাকবে না, বরং আপনি নির্ভয়ে ইমো ব্যবহার করতে পারবেন। সাইবার নিরাপত্তা আজকের যুগে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং সচেতনতা ও নিরাপদ পদ্ধতি অবলম্বন করাই অনলাইন জগতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অন্যতম উপায়।
ডেস্ক রিপোর্টার
সর্বাধিক পঠিত
Loading...