ইলেকট্রিক বাইকের বাজারে ইতোমধ্যে নিজের জায়গা করে নিয়েছে রিভল্ট এবং ওলা। যদিও ওলার ইলেকট্রিক বাইক এখনো বাজারে আসেনি, তবে এর আকর্ষণীয় ডিজাইন ও সাশ্রয়ী জ্বালানি ব্যবস্থার জন্য বাইকপ্রেমীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ওলার এই উদ্যোগ ইলেকট্রিক বাইকের ক্ষেত্রে নতুন এক সম্ভাবনা তৈরি করেছে, যেখানে পরিবেশ বান্ধব এবং খরচ সাশ্রয়ী গাড়ির প্রয়োজনীয়তা আগের চেয়ে অনেক বেশি অনুভূত হচ্ছে।
ইলেকট্রিক বাইকের পাশাপাশি বর্তমানে বাজারে এসেছে সিএনজি চালিত বাইকও। বাজাজ কোম্পানি তাদের ‘ফ্রিডম’ নামক একটি সিএনজি বাইক ইতিমধ্যেই বাজারে এনেছে, যা বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। যদিও সিএনজি বাইক চলার খরচ পেট্রোলের তুলনায় কম, তবে ইলেকট্রিক বাইকের মতো এতটা সাশ্রয়ী নয়। তবুও এই ধরনের বাইক চলাচলে জ্বালানি সাশ্রয় এবং পরিবেশ রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখছে।
তবে এসবের মাঝেও রয়্যাল এনফিল্ড এবার ইলেকট্রিক বাইক নিয়ে আসতে চলেছে, যা বাজারের অন্যদের পেছনে ফেলতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। প্রায় এক শতাব্দী ধরে রয়্যাল এনফিল্ড ক্লাসিক ডিজাইন এবং শক্তিশালী ইঞ্জিনের জন্য বাইকপ্রেমীদের মনে আলাদা জায়গা করে নিয়েছে। প্রতিটি মডেলেই রয়্যাল এনফিল্ড তার ঐতিহ্যের ছাপ ধরে রেখেছে, যা ব্যবহারকারীদের কাছে আবেগের অন্য নাম।
আগামী ৪ নভেম্বর রয়্যাল এনফিল্ডের প্রথম ইলেকট্রিক বাইকটি লঞ্চ হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। লঞ্চের আগে এর একটি টিজার প্রকাশিত হয়েছে, যা ইতিমধ্যেই ভাইরাল। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে এই টিজারের ছবিটি রয়্যাল এনফিল্ডের আসন্ন ইলেকট্রিক বাইকের। এর মধ্যে তেলের ট্যাংকের স্থানে স্টোরেজ স্পেস যুক্ত করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। টিজার দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, বাইকটির ডিজাইন ক্লাসিক ধাঁচের হলেও এটি একটি সম্পূর্ণ ইলেকট্রিক মডেল হবে।
একটি ইলেকট্রিক বাইকের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এর রেঞ্জ, অর্থাৎ একবার পূর্ণ চার্জে এটি কত দূর যেতে পারে। রয়্যাল এনফিল্ডের এই বাইকটি এক চার্জে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার চলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এর সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে ৪ নভেম্বরের পর। বাজারে আসতে কিছুটা সময় লাগলেও, ধারণা করা হচ্ছে এই বাইকটি ২০২৬ সালের মধ্যে বাজারে পাওয়া যেতে পারে।
এদিকে গত ২১ অক্টোবর বাংলাদেশের মোটরসাইকেল বাজারে রয়্যাল এনফিল্ডের চারটি মডেল উন্মোচিত হয়েছে, যা বাইকপ্রেমীদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। বাংলাদেশের পরিবেশে মানানসই এবং ব্যবহারকারীদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে ইফাদ মোটরস লিমিটেড এই ব্র্যান্ডটি নিয়ে এসেছে। এই মডেলগুলো হলো— হান্টার, ক্লাসিক, বুলেট ও মিটিয়র।
আরও পড়ুনঃ- ইমো অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং প্রতিরোধে আপনার করণীয় কি?
রয়্যাল এনফিল্ডের বাংলাদেশের হেড অব বিজনেস মমিনুর রহমান তানভীর জানান, হান্টার মডেলের দাম শুরু হচ্ছে তিন লাখ ৪০ হাজার টাকা থেকে, ক্লাসিক মডেলের দাম চার লাখ ৫ হাজার টাকা থেকে, বুলেট মডেলের দাম চার লাখ ১০ হাজার টাকা থেকে এবং মিটিয়র মডেলের দাম শুরু হচ্ছে চার লাখ ৩৫ হাজার টাকা থেকে। এই বাইকগুলোর প্রতিটি মডেলেই থাকবে উন্নত ফুয়েল ইনজেকশন সিস্টেম এবং ‘জে’ সিরিজের পরিমার্জিত সিঙ্গেল সিলিন্ডার ইঞ্জিন। এছাড়া রং ও ব্রেকিং সিস্টেমের ওপর ভিত্তি করে আলাদা ভেরিয়েন্টও রাখা হয়েছে, যা ব্যবহারকারীদের পছন্দ অনুযায়ী বিকল্প তৈরি করেছে।
বাংলাদেশের বাজারে রয়্যাল এনফিল্ডের এই উপস্থিতি দেশীয় বাইকপ্রেমীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস সৃষ্টি করেছে। রেট্রো এবং ক্লাসিক ডিজাইনের সাথে আধুনিক প্রযুক্তির সংমিশ্রণে বাইকপ্রেমীদের মন জয় করতে সক্ষম এই মডেলগুলো, যা বাংলাদেশের মোটরসাইকেল বাজারকে নতুন এক দিগন্তে নিয়ে যেতে পারে।
ডেস্ক রিপোর্টার
সর্বাধিক পঠিত
Loading...