বর্তমান বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ই-কমার্স সাইট অ্যামাজন। নির্ভেজাল পণ্য সরবরাহ ও গ্রাহক সেবার মানের দিক দিয়ে অ্যামাজনের সুনাম রয়েছে বিশ্বব্যাপী। সম্প্রতি কোম্পানিটিতে লুটের ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ আছে ক্যামেরা, আইফোন এবং লক্ষাধিক টাকার দামি জিনিসপত্র লুট করেছে দুই যুবক। অ্যামাজনের পক্ষ থেকে সম্প্রতি এই জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের এক সূত্রে জানা যায়, কোম্পানিটির ডেলিভারি পার্টনারদের চোখে ধুলা দিয়ে লাখ লাখ টাকার পণ্য লুট করে দুই যুবক। এ ঘটনার জের ধরে ভারতের উরওয়া থানায় ঐ দুই যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘অভিযুক্ত দুই ব্যক্তির নাম রাজ কুমার মীনা (বয়স ২৩) এবং রাজস্থানের সুভাষ গুর্জার (বয়স ২৭)। উরওয়া পুলিশ কমিশনার অনুপম আগরওয়াল অভিযুক্ত দুই ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছেন বলে জানা যায়।
প্রতারণার ধরণ:
জাল পরিচয় ব্যবহার করে ও-ই দুই যুবক অ্যামাজন থেকে ১১ লাখ ৪৫ হাজার টাকার পণ্য অর্ডার করেছিল। যার মধ্যে রয়েছে দুটি উচ্চ-মূল্যের সোনি ক্যামেরা এবং অন্যান্য ১০টি আইটেম। পণ্য অর্ডার করতে তারা বিভিন্ন ছদ্মনাম ব্যবহার করে। অমিত নামের ভুয়া পরিচয় বানিয়ে অ্যামাজন থেকে পণ্য গুলো অর্ডার করে তারা।
শুধু ভুয়া নামই নয়, এ ক্ষেত্রে তারা আশ্রয় নিয়েছে ভুয়া ঠিকানারও। ভারতের ব্যাঙ্গালুরু কেএসআরটিসি বাস স্ট্যান্ডের কাছের একটি জাল ঠিকানা এবং ভুল মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে দু’জন। পণ্য ডেলিভারির সময় তাদের একজন অ্যামাজনের ডেলিভারি এক্সিকিউটিভকে বিভ্রান্ত করতে শুরু করে। এই সুযোগে আর একজন পণ্যের ক্রমানুসারে অন্যান্য প্রোডাক্ট গুলোর সাথে বাক্সে থাকা লেবেলগুলোকে অদলবদল করতে থাকে।
ডেলিভারির এক পর্যায়ে ডেলিভারিম্যান তাদের কাছে ওটিপি জানতে চান। তখনই রাজ কুমার ইচ্ছা করে একটি ভুল ওটিপি প্রদান করে, যার ফলে ডেলিভারি দিতে অতিরিক্ত সময় লেগে যায়। তখন ডেলিভারি এক্সিকিউটিভকে তারা বলেন, যে তারা আজ আর পণ্যের ডেলিভারি নিবেন না এবং পরের দিন পুনোরায় তাদের অর্ডারকৃত পণ্য নিয়ে আসতে বলেন। ডেলিভারি এক্সিকিউটিভের চোখের আড়ালে ততক্ষণে তারা পণ্যগুলো বদলে ফেলে। নিজের মনের অজান্তেই ১২টি আসল পণ্যের বদলে ভুল পণ্য নিয়ে ফেরত আসেন তিনি। এরপরের দিন দুই যুবক আসল পণ্যগুলো রেখে তাদের অর্ডারটি বাতিল করে দেয়।
আরও পড়ুনঃ- বিয়ের নিমন্ত্রণ পত্র ভেবে হোয়াটসঅ্যাপ লিংকে ক্লিক করলেই হবেন দেউলিয়া!
যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে:
ভারতে অ্যামাজনের ডেলিভারি পার্টনার মাহিন্দ্রা লজিস্টিকস। তাদের কাছে ফেরত আসা পণ্যগুলো যখন তারা ভালোভাবে খেয়াল করেন,তখন পণ্যের গায়ে থাকা স্টিকারগুলো তাদের কাছে সন্দেহজনক মনে হয়। তৎখনাত তারা বিষয়টি অ্যামাজন কর্তৃপক্ষকে জানায়।
অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্তে দেখা যায়, অভিযুক্ত দুই যুবক আসল সোনি ক্যামেরাগুলো নকল আইটেমগুলোর মাধ্যমে পরিবর্তন করে নিয়েছেন। উরওয়া পুলিশ কিছুক্ষণের মধ্যেই তাদের চুরির ধরণ শনাক্ত করে। এরপর শহর জুড়ে অভিযান পরিচালনার এক পর্যায়ে অভিযুক্ত দুই যুবক শহর ছেড়ে পালানোর সময় তাদের একটি বাস স্টেশন থেকে আটক করা হয়।
ডেস্ক রিপোর্টার
সর্বাধিক পঠিত
Loading...