দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে নতুন ট্রাভেল পাস ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এখন থেকে দ্বীপটিতে ভ্রমণের জন্য প্রত্যেক পর্যটককে ট্রাভেল পাস সংগ্রহ করতে হবে। এছাড়া পরিবেশ সুরক্ষার অংশ হিসেবে পর্যটকরা তাদের সঙ্গে পলিথিন ও প্লাস্টিকজাত পণ্য নিয়ে যেতে পারবেন না। দ্বীপে অবস্থানকালে তারা কোন হোটেলে থাকবেন, সেই তথ্যও নিবন্ধন করা হবে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এসব কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছে।
মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব সাবরীনা রহমান স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের নিয়ন্ত্রণে ও পরিবেশ রক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কমিটির প্রধান দায়িত্ব হলো জাহাজে ভ্রমণকারী পর্যটকদের ট্রাভেল পাস যাচাই করা এবং তাদের ভ্রমণের অনুমতি নিশ্চিত করা। টেকনাফ থেকে ছেড়ে যাওয়া জাহাজে শুধুমাত্র অনুমোদিত ট্রাভেল পাসধারী পর্যটকরা ভ্রমণ করতে পারবেন।
এছাড়া নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক দ্রব্য বহন করা থেকে বিরত রাখা হবে। জাহাজের এন্ট্রি পয়েন্ট এবং সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্রবেশস্থলে এসব বিষয়ে নির্দেশনা প্রদর্শনের জন্য বিলবোর্ড স্থাপন করা হবে। পর্যটকদের কোন হোটেলে অবস্থান করবেন, তার তথ্য রেজিস্টারে সংরক্ষণ করা হবে, যা পর্যটক ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনতে সাহায্য করবে। কক্সবাজার জেলার পরিবেশ অধিদপ্তর এই কার্যক্রমের সার্বিক তদারকি ও সমন্বয় করবে। প্রয়োজনে কমিটি অতিরিক্ত সদস্য অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে।
ট্রাভেল পাস কীভাবে সংগ্রহ করবেন?
দ্বীপে ভ্রমণের জন্য ট্রাভেল পাস সংগ্রহে একটি ডিজিটাল পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড একটি অ্যাপ ডেভেলপ করছে, যা ডাউনলোড করে সহজেই ট্রাভেল পাস সংগ্রহ করা যাবে। অ্যাপ ইনস্টল করার পর জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। নিবন্ধনের পরে পর্যটকরা প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করে অনলাইনে ট্রাভেল পাস পাবেন। এই পাসটি দেখিয়ে টেকনাফ থেকে ছেড়ে যাওয়া জাহাজে ওঠার অনুমতি মিলবে।
আরও পড়ুনঃ- গ্যাস সিলিন্ডার দীর্ঘস্থায়ী করতে এই ৫টি অভ্যাস অবলম্বন করুন!
তবে, অ্যাপটি এখনও ডেভেলপমেন্ট পর্যায়ে থাকায় গুগল প্লে স্টোরে এটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। জানা গেছে, অ্যাপটি সম্পূর্ণ প্রস্তুত হওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
এই নীতির মূল উদ্দেশ্য সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ রক্ষা করা। বিপুল সংখ্যক পর্যটকের যাতায়াত এবং অসচেতন আচরণের ফলে দ্বীপের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। তাই পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার সীমিত করে দ্বীপের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। একইসঙ্গে হোটেল ও জাহাজ পরিচালনায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
সরকারের এই উদ্যোগ শুধু পরিবেশ রক্ষায় নয়, পর্যটকদের ভ্রমণের অভিজ্ঞতাও আরও উন্নত করবে বলে আশা করা হচ্ছে। দ্বীপটি যেন তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ধরে রাখতে পারে, সেজন্যই পর্যটক নিয়ন্ত্রণের এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
ডেস্ক রিপোর্টার
সর্বাধিক পঠিত
Loading...